Diseases

টাইফয়েড ও প্যারাটাইফয়েড রোগের কারন/লক্ষন/ চিকিৎসা/উপদেশ

টাইফয়েড ও প্যারাটাইফয়েড রোগের মূল উৎস হলো মানুষ। মানুষ দ্বারা এই রোগ হয়। টাইফয়েড ও প্যারাটাইফয়েড রোগের কারন হলো স্যালমোনেলা টাইফি ও প্যারাটাইফি দ্বারা এ রোগ মানবদেহে সংক্রামিত হয়। এই জ্বর কে একএে Enteric Fever বা আন্তিক জ্বরও বলে।

আক্রান্ত ব্যক্তির মল মূএ পানিতে মিশে সেই পানি অন্য কোন মানুষের শরিরে প্রবেশ করলে এই রোগ হয়। কাঁচা ফল মূল, পানি, দুধ বা আইসক্রিমের মাধ্যমে এ রোগের জীবানু  মানবদেহের ক্ষুদ্রতম স্থানে বাসা বাধে এবং ক্ষতের সৃষ্টি করে। জীবানু গুলো দেহ থেকে টক্সিন ( Toxin)   নামক এক প্রকার পদার্থ রক্তে মিশে জ্বরের সৃষ্টি করে।

রোগীর হাত পা কাপতে থাকে অনেকের পেট খারাপ হয়, পেট ফাপা দেয় এমনকি প্রসাব বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থাকে টাইফয়েড বলে। প্যারাটাইফয়েড  আবার এমন ভাবে প্রকাশ পায় না। টাইফয়েডে Step ladder like জ্বর আসে কিন্তু প্যারাটাইফয়েড এ অনিয়মিত জ্বর আসে।

টাইফয়েড ও প্যারাটাইফয়েড রোগের লক্ষন

টাইফয়েড_ও_প্যারাটাইফয়েড_রোগের_লক্ষন
  • রোগীর জ্বর আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পায়।
  • প্রথমদিকে শরীরে হালকা ব্যথা অনুভব হয় এবং আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পায়।
  • কাজে অনিহা দেখা দেয়।
  • সকালে জ্বর কমে যায় এবং আবার যখন উঠে তখন পূর্বের থেকে বেশি হয়।
  • ৩-৪ দিনের মধ্যে জ্বর ১০২° এর থেকে বেশি হয়।
  • নাড়ীর স্পন্দন কমতে থাকে।
  • জিহ্বার মধ্যে ভাগের পিছনে সাদা দাগ হয়ে যায়। সামনে ও পাশে পরিষ্কার থাকে কিন্তু লাল হয়ে যায়।
  • টাইফয়েড রোগীর পেট খারাপ হয় কিন্তু প্যারাটাইফয়েড রোগীর কোষ্ঠকাঠিন্য বেশি পরিলক্ষিত হয়।
  • রক্ত পরীক্ষায় Lymphocyte  এর পরিমান বেশি দেখা যায়।
  • এই রোগের চিকিৎসা না করিলে ৭দিন, ১৪ দিন,২১ দিন, ২৮ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
  • ২৮ দিনের সময় রোগী কালো পায়খানা করতে পারে রোগী দুর্বল হয়ে যায় এমনকি রোগী Heart Fail  ও করতে পারে।
  • Widel Test এর মাধ্যমে টাইফয়েড রোগ সনাক্ত করা হয় সাথে Blood C/P  করা হয়।

টাইফয়েড ও প্যারাটাইফয়েড রোগের কারন ও চিকিৎসা

  • টাইফয়েড বা প্যারাটাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত রোগী কে ক্লোরামফেনিকল গ্রুপের ঔষধ নিয়মিতভাবে সেবন করতে হবে।টাইফয়েড ও প্যারাটাইফয়েড রোগের কারন যেনে সঠিক ভাবে এই ঔষধ গ্রহণ করলে রোগীর অবস্থা খারাপ হবার সম্ভাবনা কম থাকে।
  • Chloramphenicol /ক্লোরামফেনিকল  বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন নামে নিয়ে আসছে। যেমন : cap. Chloromycetin (ক্লোরোমাইসেটিন), cap. Opsomycetin ( অপসোমাইসেটিন) , cap. Ramex,  cap. Edrumycetin তবে বর্তমানে এর ব্যবহার অনেকটা কমে গেছে। এতে R.B.C নষ্ট হয়।
  • সেবন:বয়স্কদের জন্য জ্বর না কমা পর্যন্ত ২ টি করে ক্যাপসুল ৬ ঘন্টা পর পর দিতে হবে।
  • ১২-১৭ বছরের জন্য ১ টি করে ক্যাপসুল ৬ ঘন্টা পর পর দিতে হবে।
  • শিশুদের জন্য
  • ১-২ চামচ করে সিরাপ ৬ ঘন্টা পর পর ৪ বার দিতে হবে।
  • উপরের ঔষধে জ্বর না কমলে Ciprofloxacin গ্রুপের ঔষধ দিতে হবে। যেমন : tab. Ciprocin 250/500 mg, tab. Cipro A  250/500 mg, tab. Flontin 250/500 mg, tab. Ciflocin 250/500
  • পূর্ণ বয়স্কদের জন্য ৫০০ মি:গ্রা: এর ১ টি করে ট্যাবলেট দিনে ২ বার।
  • ৮-১৫ বছরের শিশুদের জন্য ২৫০ মি: গ্রা: এর ১ টি ট্যাবলেট দিনে ২ বার।
  • শরীরের তাপমাত্রা বেশি হলে বা অন্যান্য ব্যথার জন্য Paracetamol যুক্ত ঔষধ দিতে হবে।  যেমন: বয়স্কদের জন্য ট্যাবলেট, tab.Napa, tab. Ace, tab. Renova, tab. Xpa, tab. Tamen, tab.Fast. ২ টি করে ট্যাবলেট ৬ ঘন্টা পর পর এবং শিশুদের জন্য syp. Napa, syp. Ace, syp. Fast, syp. Tamen, syp. Xpa. ১-২ চামচ করে সিরাপ ৬ ঘন্টা পর পর দিনে ৪ বার।
  • উপরের ঔষধের সাথে একটি ভিটামিন গ্রুপের ঔষধ একটি ভিটামিন বি কমপ্লেক্স দিতে হবে। যেমন:  B 50 forthe, aristoplex, V -plex, Orabex. এবং এাকি ভিটামিন সি দিতে হবে। যেমন :  Ceevit, Ascovit, Ascobex, Chewce, Vasco etc.
  • রোগী বেশিদিন জ্বরে আক্রান্ত হইয়া ডিহাইড্রেড হলে তাকে inj. Dexaqua 5/10%500 / 1000 cc, Libott 5/10% 500/1000 cc মিনিটে ৪০/৫০ ফোটা করে  শিরায় দিতে হবে।রোগী বেশি দুর্বল থাকলে Saline  এর সাথে V- plex বা B 50 forthe inj. মিশিয়ে দেয়া যেতে পারে।
  • টাইফয়েড বা  প্যারাটাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত রোগীর পায়খানা না হলে প্রথম সপ্তাহে মুখে খাবার ঔষধ দেয়া যাবে তাতে যদি না কমে দ্বিতীয় সপ্তাহে আর মুখের ঔষধ দেয়া যাবে না। তখন Glycerin Suppository মলদ্বারে দিতে হবে।

টাইফয়েড ও প্যারাটাইফয়েড রোগের উপদেশ

  • রোগীকে বিশ্রামে রাখতে হবে।
  • যেন বেড সোর ( Bedsore)  না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • পেটে কোন সমস্যা না থাকলে রোগীকে পাউরুটি,  কমলা, গ্লুকোজ, সাবুদানা এগুলো দেয়া যেতে পারে।
  • পেটের অসুখ থাকলে ছানার পানি, ডাবের পানি দেয়া যেতে পারে।
  • রোগ নির্ণয়ের জন্য Widal test করলে জ্বর নিশ্চিত হওয়া যায়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে World Health Organisation ( WHO) তারা যেকোনো রোগ সম্পর্কে জানতে সাহায্য করে। কোন রোগের জন্য কোন সেবা নিতে হবে তারা তাদের ওয়েবসাইট এ এ সম্পর্কে বলেছে।

rakibjomadder

Recent Posts

Xpa xr 665 mg tablet

Xpa xr 665 mg tablet জ্বর মাথা ব্যথা, শরীর ব্যথা দাঁত ব্যথা, কোমড় ব্যথা, জয়েন্টের…

55 years ago

নেপ্রোক্সেন এর কাজ কি

Napoxen একটি ব্যথা বিরোধী ঔষধ। এটি যেকোন ধরনের ব্যথার জন্য ব্যবহার করা হয়। নেপ্রোক্সেন এর…

55 years ago

Maxpro 20 mg এর কাজ

Maxpro 20 mg tablet হলো ইসোমিপ্রাজল গ্রুপের এন্টি আলসারেন্ট Anti ulcerant ঔষধ। Maxpro 20 mg…

55 years ago

হাঁপানি রোগের চিকিৎসা/ Bronchial Asthma/ Causes/Treatment

Bronchial Asthma / ব্রঙ্কিয়াল এ্যাজমা সকল বয়সের মানুষের হইতে পারে, তবে পৌড় বয়সের লোকদের এই…

55 years ago

টামেন টার্বোর কাজ কি/ Tanen turbo r kaj ki

টামেন টার্বো মূলত হালকা থকেকে মাঝারি ব্যথার জন্য কাজ করে এছাড়াও যকোনো ব্যথা যমন :…

55 years ago

ফাস্ট ৫০০ মি: গ্রা: ট্যাবলেটের কাজ/ Fast 500 mg tablet er kaj

ফাস্ট ট্যাবলেট এর জেনেরিক নাম হলো প্যারাসিটামল(Paracetamol).এটিঅ্যাসিটামাইনোফেন ( Acetaminophen) গ্রুপের ঔষধ। যা অ্যান্টিপাইরেটিক ( anti…

55 years ago