আমাদের দেহে কতটুকু আমিষ প্রয়োজন? তা আমাদের দেশের ৯০% মানুষ যানে না। আমাদের দেহে প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমানে আমিষের প্রয়োজন। আমিষ খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান শরীরের জন্য। আমাদের দেহ মাএ ৭% আমিষ, ৭০% পানি, ২০% চর্বি, ২% ভিটামিন মিনারেল, ১% লবনের সমন্বয়ে গঠিত।
দেহ গঠনে আমিষের প্রয়োজনীয়তা
আমিষ মানবদেহ গঠনে একটি অন্যতম উপাদান। এটিকে খুব গুরুত্বপূর্ন অনু বলা হয় যা, কোষ গঠনের ক্ষেএে সবচেয়ে বেশি কাজ করে থাকে। এছাড়াও দেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলো এবং ট্যিসু নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। নিঃসন্দেহে এটি অন্যতম মৌলিক ভূমিকা পালন করে থাকে। তার মানে অনিয়ন্ত্রিত মাএায় আমিষ গ্রহণ করা যাবে না।আমিষ খাওয়ার ব্যাপারে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তা না হলে উপকারের থেকে অপকার বেশি হবে।
আমাদের দেহে কতটুকু আমিষ প্রয়োজন :
আমাদের জানা দরকার সুস্থ দেহে প্রতিদিন কতটুকু আমিষ প্রয়োজন। এক্ষেত্রে প্রতি কেজি ওজনের জন্য ১ গ্রাম আমিষ প্রয়োজন। যদি কারো ওজন ৮০ কেজি হয় তাহলে তার প্রতিদিন ৮০ গ্রাম আমিষ দরকার। তবে যারা নিয়মিত ব্যায়াম করে তাদের জন্য ১.৫ গ্রাম গ্রহণ করা যাবে। এছাড়াও গর্ভবতী মায়েদের জন্য অতিরিক্ত ১৪ গ্রাম আমিষ দরকার এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য অতিরিক্ত ২৫ গ্রাম দিতে হবে।
কোন ধরনের আমিষ গ্রহণ করতে হবে
আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় আমিষের ৮০% আমিষ উদ্ভিদ থেকে গ্রহণ করতে হবে।যেমন: শাক,বীজ,সবজি, বাদাম,শস্য ইত্যাদি উদ্ভিদ থেকে পেয়ে থাকি। এবং বাকি ২০% আমিষ প্রানী থেকে সংগ্রহ করতে হবে যেমন: মাছ,মাংস,দুধ,ডিম ইত্যাদি।
লাইফ ফুড ও ডেড ফুড :
শাক,বীজ,সবজি, বাদাম,শস্য ইত্যাদি জীবন্ত শাক-সবজিকে বলা হয় লাইফ ফুড এবং মানুষের তৈরি বিভিন্ন মুখরোচক খাবার কে বলা হয় ডেড ফুড বা মৃত খাবার। এগুলো শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এগুলো অ্যাডিকটিভ মনো সালফেট গ্রটামেট উপাদান মিশিয়ে তৈরি করা হয় যা দেহের কোন উপকার করে না। মানুষ আমিষ নিরামিষ সব কিছুই খাবে তবে প্রাকৃতিক নিয়ম অনুযায়ী।
দেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের দিক থেকে মানুষ একইসাথে তৃণভোজী ও মাংসাশী। মাংসাশী প্রাণী শস্য বা তৃন খায় না আর খেলেও সামান্য পরিমান। তবে মানুষ দেখতে মাংসাশী হলেও গঠনগত ভাবে এরা তৃণভোজী। মানুষ যদি ৭০% প্রানিজ আমিষ জাতীয় খাবার খেত তাহলে ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, মোটা হয়ে যাওয়া, উচ্চ রক্তচাপ, লাইফস্টাইল জনিত রোগ হতো।
যত বেশি আমিষ খাবো ততো বেশি অ্যাসিড উৎপন্ন হবে।
তাহলে কি খেতে হবে:
- প্রতিদিন ২ থেকে ৩ লিটার পানি খাওয়া
- তেল, বাদাম, বীজ, অ্যাভোকাডো,অলিভ অয়েল, তিষি,তিলের তৈল,বাটার দিয়ে সালাদ এবং সবজি খেতে হবে।
- শস্যজাত আমিষ খেতে হবে। যেমন: ডাল,ছোলা।
- বাদাম জাতীয় : কাঠ বাদাম, কাজুবাদাম, অলনাট,ব্রাজিল নাট, পাইন নাটস ইত্যাদি।
- বাছাই করা শর্করা : লাল আটা, লাল চাল, কালো চাল, মিষ্টি আলু ও জব খেতে হবে।এগুলো মোট খাদ্যর ১৫% থাকবে।
- ফলের পরিমান: ফলের পরিমান থকবে সামান্য। যেমন: আপেল, বেদনা, পেপেঁ,ডুমুর, আনারস এগুলোতে পচুর এনজাইম থাকে।
উল্লেখিত উপাদান দিয়ে খাদ্যকে সুস্বাদু করতে হবে। তা না হলে প্রাকৃতির মত সুন্দর জীবন জাপান করা যাবে না।
বেশি আমিষ খেলে উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি
আমিষ জাতীয় খাবার আমাদের দেহের জন্য অপরিহার্য। সেজন্য কেবল আমিষ গ্রহণ করলেই হবে না। আাবার কেবন নিরামিষ ভোজী ও হওয়া যাবে না। উচ্চ আমিষ জাতীয় খাবার যেমন : মাছ, মাংস, ডিম, দুধ এগুলো পরিমিত পরিমানে গ্রহণ করতে হবে। অতিরিক্ত গ্রহণ করলে হিতের বিপরীত হতে পারে যেমন : এলার্জিক রাইনাইটিস / Allergic Rhinitis, মোটা হয়ে যাওয়া / Obese, উচ্চরক্তচাপ /Hypertension এর মত সমস্যা গুলো দেখা দিতে পারে।
আমাদের দেহে কতটুকু আমিষ প্রয়োজন তা কি আমরা পাই
প্রতিটি মানুষের ওজনের সমপরিমাণ অর্থাৎ ৮০ কেজি ওজনের একজন মানুষের ৮০ গ্রাম আমিষ প্রয়োজন। মধ্যবিওরা সেই পরিমান আমিষের যোগান দিতে পারে না। এজন্য দিন দিন আমিষের অভাবের কারনে নানা রকম রোগে ভুগতে থাকে। তারা একদিন অনেক পরিমান আমিষ পেলেও পরের দিন মোটেই পায় না। এজন্য ব্যালেন্স ডায়েট (Balance Diet) প্রয়োজন।
প্রাকৃতিক ভাবে উৎপাদিত অনেক কিছুর মধ্যেও আমিষ পাওয়া যায়। যা দিয়ে মোটামুটি হলেও আমিষের চাহিদা পূরন করা সম্ভব। প্রাকৃতিক ভাবে চাহিদা মটানোর জন্য ডা: মুজিবুর রহমান স্যারের প্রাকৃতিক উপায়ে রোগ নিরাময় বইটি পড়তে পারেন অথবা Vantage Health Centre এ যোগাযোগ করতে পারেন। এতেকরে আপনি আপনার জীবন সুন্দর করে উপভোগ করতে পারবেন।
আমিষের অভাবে শিশুদের কি রোগ হয়
আমিষ মানবদেহ বৃদ্ধিতে সাহায্যে করে। দীর্ঘদিন আমিষের অভাবে শিশুদের বুদ্ধি হ্রাস পায়। আমিষের অভাবে শিশুদের বৃদ্ধি ব্যহাত হয় এবং কোয়াশিয়ারকর ও ম্যারাসমাস এর মতো রোগ হতে পারে।
আমিষের অভাবে বয়স্কদের কি রোগ হয়
আমিষের অভাবের কারনে বয়স্কদের বিবেক বুদ্ধি কমতে থাকে এবং আস্তে আস্তে রক্ত সল্পতা দেখা দেয়।
নিয়ম মেনে আমিষ জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনের চেয়ে বেশি না এবং প্রয়োজনের চেয়ে কমও না।
Leave a Reply