প্যারাসিটামল মূলত একটি ব্যাথা নাশক ঔষধ। এটি সর্দি জ্বর এর জন্যও ব্যাবহার করা হয়।অনেক মানুষ জানে না প্যারাসিটামল কি । দেশের সাধারন মানুষের ৮০% সর্দি জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল ব্যাবহার করে।
ব্যাথা নাশক (Analgesic) এবং জ্বর নাশক হচ্ছে (Anti pyretic) যে সকল মানুষ Asprin সহ্য করতে পারে না তােদর জন্য প্যারাসিটামল (Paracetamol).
প্যারাসিটামল কোন কোন ফর্মে পাওয়া যায়:
- পেডিয়েট্রিক ড্রপ
- সিরাপ
- সাসপেনশন
- ট্যাবলেট
- ইনজেকশন
- সাপোসিটরি
মাএা ও সেবন :
★পেডিয়েট্রিক ড্রপ :
( ৩ – ৬ মাস)
০.৫ মিলি – ১ মিলি রোজ ৩-৪ বার
★ সিরাপ :
** ( ৬ – ১১ মাস) :১/২ চামচ – ১ চামচ রোজ ৩-৪ বার
**( ১ – ৩ বছর) :১ চামচ – ২ চামচ
** ( ৪- ৭ বছর) : ২ চামচ – ৩ চামচ
★ সাসপেনশন :
সিরাপের মত একই নিয়ম।।
★ ট্যাবলেট :
সাধারণত প্যারাসিটামল ৫০০ মি লি গ্রাম হয়। একজন পূর্ন বয়সের মানুষ রোজ ২ টি করে ট্যাবলেট ৬ ঘন্টা পর পর সেবন করতে পারে ( ৪০০০ মিলি গ্রামের বেশি ব্যাবহার করা যাবে না।
★ ইনজেকশন :
বর্তমানে প্যারাসিটামল আইভি (Intravenous) ফর্মে পাওয়া যায়। যা ১০২° ফারেনহাইট এর উপর জ্বর হলে ব্যাবহার করা হয়।
★ সাপোসিটরি :
( ৩ মাস থেকে – ২ বছর ) : ১২৫ মি:লি:
( ২ বছর থেকে – ৬ বছর) : ২৫০ মি:লি:
( ৭ বছর থেকে – বয়স্কদের) : ৫০০ মি: লি:
প্যারাসিটামল ৬৬৫ মিলি গ্রাম :
প্যারাসিটামল ৬৬৫ মিলি গ্রাম কে প্যারাসিটামল এক্সআর বলা হয়। তীব্র ব্যাথার জন্য ১ টি করে ট্যাবলেট প্রতিদিন ৩-৪ বার ব্যাবহার করা যায়। এছাড়াও জ্বর মাথা ব্যাথার জন্য ব্যাবহার করে থাকি।
প্যারাসিটামলের উপকারীতা :
প্যারাসিটামল হলো হালকা (Analgesic) অ্যানালজেসিক বা ব্যাথানাশক এবং ( Anti pyretic) অ্যান্টিপাইরেটিক বা জ্বরনাশক। এটি হালকা মাথা ব্যাথা, দাঁত ব্যাথা, মাসিকের ব্যাথা, পেট ব্যাথা ও জ্বরের জন্য অনেক উপকারী।
প্যারাসিটামল কি নিরাপদ :
৫২ বছর ধরে প্যারাসিটামল চলে আসছে । প্যারাসিটামল নিরাপদ অনেক ডাক্তার পেসক্রিপসন করেন ।
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া :
প্যারাসিটামল এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই বল্লেই চলে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর সামান্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। যেমন : মুখ শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, মাথা ঘোরাতে পারে, বমি বমি ভাব হতে পার। তবে এই সমস্যা খুবই সামান্য পরিমানে। লিভার ও কিডনি সমস্যা রোগীদের ক্ষেত্রে এটি সংবেদনশীল। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি।
মাতৃদুগ্ধ কালিন সমস্যা :
প্যারাসিটামল মাতৃদুগ্ধে নৃশঃত হয়। তবে এতে তেমন কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি। পরিমিত পরিমানে ব্যাবহার করা যাবে। তারপরও ডাক্তারের পরামর্শ জরুরি।
প্যারাসিটামল কি খালি পেটে খাওয়া যায় :
প্যারাসিটামল হলো অ্যাসিটামাইনোফিন গ্রুপের ব্যাথা নাশক ঔষধ। এটি খালি পেটে বা খাবার সাথে খাওয়া যায়।খালি পেটে খেলে তেমন কোনো সমস্যা হয় না। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। বমি বমি ভাব হতে পারে। মাথা ঘোরাতে পারে। তাদের ক্ষেএে খালি পেটে না খাওয়া ই ভালো।
প্যারাসিটামল খেলে কি বেশি প্রসাব হয় :
প্যারাসিটামল হলো জ্বর ও ব্যাথা নাশক ঔষধ। নিয়ম মেনে ঔষধ খেলে শরীরে তেমন কোনো প্রভাব পড়ে না। প্যারাসিটামল খেলে প্রসাব বেশি হবার কোন লক্ষন পাওয়া যায় নি। তবে কিডনি ও লিভার জনিত সমস্যা রোগীদের জন্য সংবেদনশীল। তাদের ক্ষেত্রে পরিমাপ অনুযায়ী ঔষধ দিতে হবে।
প্যারাসিটামল খেলে কি ঘুম হয় :
প্যারাসিটামল কোন ঘুমের ঔষধ না। প্যারাসিটামল হলো জ্বর ও ব্যাথা নাশক। জ্বর বা ব্যাথার জন্য যদি সেবন করে তাহলে শরীরের অস্বস্তি কমিয়ে ঘুম হতে পারে তবে তা সামান্য পরিমান। সমস্যা বেশি থাকলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে।
প্যারাসিটামল খেলে কি প্রসাবের রং পরিবর্তন হয় :
প্যারাসিটামলে সাধারণত প্রসাবের কোন রং পরিবর্তন করে না। কিডনিজনিত সমস্যা থাকলে সামান্য পরিমানে হতে পারে। অন্যান্য সমস্যার কারনে প্রসাবের রং পরিবর্তন হতে পারে সেক্ষেত্রে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে। প্যারাসিটামল খেলে কি প্রসাবের রং পরিবর্তন হয় এই প্রশ্নের কোন সঠিক প্রমান পাওয়া যায়নি।
প্যারাসিটামল বা সাপোসিটার দিয়ে জ্বর না কমলে করনীয়:
একবার প্যারাসিটামল খেলে বা সাপোসিটার ব্যাবহার করলে ৪-৬ ঘন্টার মধ্য আর ব্যাবহার করা যাবে না। সেক্ষেত্রে যদি জ্বর না কমে তাহলে ওভার ডোজ না দিয়ে কুসুম গরম পানি করে সারা শরীর মুছে দিতে হবে। যাকে বলা হয় স্পঞ্জবাথ। এতে করে ৩০-৪০ মিনিটের মধ্যে জ্বর কমে যাবে।কোনো ভাবেই প্যারাসিটামলের ওভার ডোজ দেয়া যাবে না তাতে উপকারের থেকে অপকার বেশি হবে।
বাচ্চাদের প্যারাসিটামল নিয়ে ভুল ধারণা :
অনেক সময় আমাদের দেশের মায়েরা বাচ্চাদের হালকা জ্বর হলে সামান্য পরিমানে প্যারাসিটামল সিরাপ দিয়ে থাকি আবার বেশি জ্বর হলে ওভার ডোজ দেয়। এগুলো কখনোই উচিত নয়। বয়সের উপর নির্ভর করে কতটুকু প্যারাসিটামল সিরাপ পাবে ততটুকু দিতে হবে। কম বেশি করা যাবে না।থার্মোমিটার বাচ্চার বগলে দিয়ে জ্বর মেপে দেখতে হবে।যদি ৯৯° ফারেনহাইট হয় তাহলে বুঝতে হবে জ্বর আছে। তখনই কেবল প্যারাসিটামল সিরাপ দিতে হবে এবং বাচ্চার জ্বর যদি ১০২° ফারেনহাইট হয় তাহলে বাচ্চাকে সাপোসিটার দিতে হবে। সাপোসিটার দেয়ার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি।
যে কোনো ঔষধ সম্পর্কে ভিজিট করুন Purely Health Tips এই ওয়েবসাইটে
প্যারাসিটামল হলো জেনেরিক ( Generic ) নাম কিন্তু Albion Pharmaceutical ltd. এটিকে একই নামে নিয়ে আসছে ।
Leave a Reply